অয়েলি স্কিনের বেসিক স্কিন কেয়ার রুটিন এবং টিপস

ত্বকের যত্নে আমরা কতকিছুই না ব্যবহার করি! বিশেষ করে আমাদের যাদের তৈলাক্ত ত্বক; আমরা অয়েল কন্ট্রোল করার জন্য ইন্টারনেট ঘেঁটে, গুগল করে কত ধরনের টিপস সংগ্রহ করি আর ফলো করি। যদিও বা কিছু কিছু টিপস ঝড়ে বক মারার মতন কাজ করে কিন্তু অধিকাংশই বিফলে যায়! অনেকসময় এসব টিপস ফলো করতে গিয়ে আমরা ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করে ফেলি। তাহলে অয়েলি স্কিনের অতিরিক্ত তেলতেলেভাব কন্ট্রোল করবেন কিভাবে?

তাই আজকে আমি শেয়ার করবো একটি কার্যকরী স্কিন কেয়ার রুটিন এবং কিছু টিপস, যা সঠিকভাবে ফলো করলে আপনার ফেইসের অতিরিক্ত তৈলাক্তভাব কন্ট্রোল হবে, আর স্কিন ড্যামেজ হওয়ারও কোনো আশংকা থাকবে না!

১. দৈনিক দুই বেলা অয়েল কন্ট্রোল ক্লিনজার দিয়ে  ত্বক পরিষ্কার করা

মুখ তো নয়, যেন তেলের খনি! ঘুম থেকে উঠলেই আমরা তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারী যারা আছি, আমাদের ফেইসে হাত দিলেই এরকম ফিল করি, তাই না? অয়েল কন্ট্রোল করার প্রথম জাদুমন্ত্র হচ্ছে, সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে শুধুমাত্র ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ না ধুয়ে একটি অয়েল কন্ট্রোল ফেইসওয়াশ কিংবা ডেইলি ক্লেনজার দিয়ে ত্বক পরিস্কার করে নেয়া।

সারাদিন শেষে ঘুমাতে যাবার আগে আরও একবার ত্বক ক্লিন করে নেয়া। এতে করে আপনার ত্বকের অয়েল প্রোডাকশন অনেকটাই কমে আসবে! অয়েল কন্ট্রোল করার জন্য আমি ১টি কার্যকরী ফেইসওয়াশ সাজেস্ট করবো।

কজারেক্স লো পিএইচ গুড মর্নিং জেল ক্লেনজার (COSRX Low Ph Good Morning Gel Cleanser)

কেন আমি পছন্দ করি:

  • সারাদিনের জন্য ময়েশ্চার লক করে রাখে। কোন রকমের ড্রাই ফিল হয় না।
  • মাইল্ড অ্যাসিডিক পিএইচ। ৫ থেকে ৬ এর মধ্যে থাকে।
  • এতে আছে টি ট্রি অয়েল যা স্কিনের ওয়েল কন্ট্রোল করে। পোর সাইজ ছোট করে।
  • ন্যাচারাল বিএইচএ(BHA) সমৃদ্ধ যা স্কিন টেক্সচার ইমপ্রুভ করতে হেল্প করে।
  • জেল টাইপ টেক্সচার।

এছাড়াও তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে আরও অনেক ধরনের ফেইসওয়াশ আছে যা আপনি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। তবে আমি সাজেস্ট করবো; বাজেট বেশি থাকলে কজারেক্স লো পিএইচ গুড মর্নিং জেল ক্লেনজার একবার হলেও ট্রাই করে দেখুন।

২. টোনার ব্যবহার করুন

তৈলাক্ত ত্বকের অতিরিক্ত তেলকে বশে আনার পরবর্তী অত্যাবশ্যকীয় ধাপ হচ্ছে আপনার স্কিনের সাথে মানানসই টোনার ব্যবহার করা। এছাড়াও এটি রেগুলার ও বেসিক স্কিনকেয়ারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপও বটে! টোনার আপনার ত্বকের অয়েল প্রোডাকশন কমাতেও হেল্প করে। এছাড়াও টোনার ব্যবহার করে আপনি আরও অনেক ধরনের বেনেফিট পেতে পারেন। অয়েলি স্কিনের অয়েল কন্ট্রোল করতে যে টোনারটি আমি সাজেস্ট করবো-

সিক্রেট কে- স্মেল রিপেয়ারিং টোনার (Secret Key Snail Repairing Toner)

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য আমার সবচেয়ে পছন্দের টোনার হচ্ছে Snail Extract থেকে তৈরি সিক্রেট কে- স্মেল রিপেয়ারিং টোনার। নাম দেখেই বুঝে ফেলেছেন নিশ্চয়ই যে এই টোনারটি নিলে এক্সট্রা থেকে তৈরি করা হয়েছে। এতে আরো আছে হাইলোরনিক অ্যাসিড, নিয়াসিনামাইড এবং ইজি এফ (Powerful Antioxidant)।

কেন আমি পছন্দ করি:

  • এই টোনারে আছে Snail Extract যা ত্বকের মেলানিন প্রোডাকশন কমিয়ে আনে ফলে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সানবার্নও কমাতে হেল্প করে এবং একনি দূর করতে সাহায্য করে।
  • এতে আরও আছে নিয়াসিনামাইড যা তৈলাক্ত ত্বকের অয়েল ব্যালেন্স করে পাশাপাশি আপনার যদি ওপেন পোর এর সমস্যা থাকে তবে সেই সমস্যাও অনেকটা নির্মূল করে।
  • এই টোনার টি আপনার স্কিনের পিএস ব্যালেন্স ও মেইনটেন করেন।
  • এর মধ্যে থাকা হ্যালোরনিক অ্যাসিড আপনার স্কিনকে অলওয়েজ হাইড্রেড রাখে।
  • সর্বোপরি এতে থাকা পাওয়ারফুল এন্টিঅক্সিডেন্ট (ইজি এফ) আপনার স্কিনকে ক্ষতিকার  ফ্রী রেডিক্যালস এর হাত থেকে প্রটেক্ট করে।

একটি টোনারেই এতগুলো বেনেফিট পেয়ে যাবেন! তাই আমি মনে করি; অয়েলি স্কিনের অয়েল কন্ট্রোল করতে এই টোনার একটি বেস্ট অপশন।

একটি টোনারেই এতগুলো বেনেফিট পেয়ে যাবেন! তাই আমি মনে করি; অয়েলি স্কিনের অয়েল কন্ট্রোল করতে এই টোনার একটি বেস্ট অপশন।

৩. ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করুন

যারা তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারী তাদের মনে একটি ভুল ধারণা আছে; সেটি হলো তৈলাক্ত স্কিনে ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করলে বুঝি আরও বেশি তৈলাক্ত হয়ে যাবে। আপনাদের মনে যদি এই ধারণা থেকে থাকে তবে এখনই তা ঝেড়ে ফেলে দিন! সব ধরনের স্কিনেই ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করা জরুরি। অবশ্যই ত্বকের ধরন বুঝে ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করবেন।

কজারেক্স অয়েল ফ্রি আল্ট্রা মশ্চারাইজিং লোশন (COSRX Oil Free Ultra Moisturizing Lotion) তৈলাক্ত ত্বকের জন্য উপযোগী অনেক ধরনের ময়েশ্চারাইজার কিনতে পাওয়া যায়। তবে এগুলোর মধ্যে আমার পছন্দের ময়েশ্চারাইজারটি হলো কজারেক্স অয়েল ফ্রি আল্ট্রা মশ্চারাইজিং লোশন।

কেন আমি পছন্দ করি:

  • এটি খুবই লাইটওয়েট টেক্সচার।
  • তৈলাক্ত ত্বকের অয়েল কন্ট্রোল করে।
  • খুব দ্রুত ত্বকে শোষিত হয়।
  • ত্বককে ময়েশ্চারাইজড করে।
  • স্কিনকে হেলদি, স্মুথ এবং সফট রাখে।
  • তৈলাক্ত ত্বকের উপযোগী, খুব ভালোভাবে স্যুট করে যায়।

৪. ত্বকে ফেইসমাস্ক ব্যবহার করুন

কিছু মাস্ক আছে যা আপনার ত্বকের অয়েল প্রোডাকশন কন্ট্রোল করতে সাহায্য করে। যেমনঃ ইনেস ফ্রি ভলকানিক ক্লে মাস্ক। ঘরোয়া রূপচর্চায়  ক্লে মাস্ক হতে পারে চটজলদি সমাধান।

ইনেসফ্রি সুপার ভলকানিক পোর ক্লে মাস্ক (INNISFREE Super Volcanic Pore Clay Mask)।

বাজারে অনেক ধরনের ক্লে মাস্ক কিনতে পাওয়া যায়। তবে, আমার পছন্দের ক্লে মাস্ক হলো – ইনেস ফ্রি ভলকানিক ক্লে মাস্ক।

কেন আমি পছন্দ করি:

  • ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে।
  • ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস ক্লিন করে।
  • আপনার ত্বকে একনে স্পট বা ব্লেমিশেস থাকলে তা দূর করবে।
  • ত্বকের সকল প্রকার ইমপিউরিটিস ও ডেড স্কিন সেলস দূর করে।

আরও কিছু টিপস যা অবশ্যই মেনে চলবেন

পরিশেষে বলা যায়, অয়েলি ফেইসের অয়েল কন্ট্রোল করবেন কীভাবে তা জানতে পেরেছেন। আশা করছি, এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য হেল্পফুল হবে। অথেনটিক স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টস কিনতে আপনারা চাইলে skin story page এ নক করতে পারেন অথবা আমাদের স্কিনিং স্টোরির ওয়েবসাইট থেকেও পারচেজ করতে পারেন https://skinstorybd.com/। ভালো থাকুন, নিরাপদে থাকুন।

লিখেছেন: সুপ্রভা শারমিন

Leave a Reply