রূপচর্চায় গ্রীন টি এর উপকারিতা জানেন কি?

যদিও গ্রিন টি (Green Tea) বর্তমান ওয়ার্ল্ডে অনেকের পছন্দের বেভারেজ হিসেবে পরিচিত, এর বাইরে গ্রিন টি কিন্তু স্কিন কেয়ারের কাজেও আসে। অনেক স্কিন এক্সপার্ট গ্রিন টি ইনগ্রেডিয়েন্টটিকে “সুপারস্টার” হিসেবে গণ্য করেন।

গ্রিন টির মুল উপকারিতা হচ্ছে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে আর ওজন কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু গ্রিন টি শুধু মনে অর দেহতেই নয়, স্কিনকেও অনেকভাবে সাহায্য করতে পারে। যার কারনেই বর্তমানের অনেক স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টেই গ্রিন টি ইনগ্রেডিয়েন্টটি দেখা যায়।

আজকের এই আর্টিকেলটিতে গ্রিন টি স্কিন কেয়ার বা রূপচর্চায় কিভাবে অবদান রাখে তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

গ্রিন টির ইতিহাস

প্রথমে জানা যাক গ্রিন টির ইতিহাস বা উৎপত্তি সম্পর্কে। ৭ম শতাব্দীতে জাপানের অনেক মঙ্ক চায়নাতে জেন বৌদ্ধধর্ম (Zen Buddhism) সম্পর্কে শিক্ষাগ্রহন করতে গিয়েছিল আর তারা তাদের নতুন আবিস্কার যা হচ্ছে গ্রিন টি এবং চিকিৎসা বা রোগ নিরাময়য়ের কাজে এর ব্যবহারের জ্ঞান নিয়ে জাপানে ফিরে আসে। এর পরের শতাব্দি থেকে জাপানিজ মঙ্কদের মধ্যে গ্রিন টি পান করা একটি কমন বা মুখ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। তাদের মেডিটেশনের জন্য যে শক্তি বা এনার্জি আর মেনটাল ফোকাস প্রয়োজন তা তারা গ্রিন টির থেকে পেতে থাকে।

এখন গ্রিন টির মধ্যে উচ্চ-মাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার জন্য সকলের কাছে বেশ পরিচিত। শুধু তাই নয়, গ্রিন টির মাধ্যমে ডিটক্সিং (Detoxing), প্রদাহ দূর করা, ব্লাড প্রেশার আর কোলেস্টেরল কমানে ইত্যাদি হেলথ বেনিফিট পাওয়া যায়।

স্কিনে গ্রিন টির উপকারিতা

ত্বকের ইরিটেশন আর রেডনেস দূর করে

গ্রিন টিতে রয়েছে হাই লেভেলের পলিফেনল (Polyphenols) যার ফলে এর মধ্যে রয়েছে এন্টি-ফ্লামেটোরি (Anti-inflammatory) গুণাবলী। এটি ইরিটেডেট স্কিনে সুথিং ফিল দিবে, স্কিনের রেডনেস যা ইরিটেশনের জন্য হয় তা কমিয়ে আনবে আর স্কিনের ফুলে যাওয়া কমিয়ে দিবে। ত্বক যদি হালকা কেটে যায় বা সানবার্ন হয়, তাহলে স্কিনে গ্রিন টি টোনার বা জেল ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।  

একনে কমায়

গ্রিন টির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি উচ্চ-মাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (Antioxidant) দিয়ে ভরপুর, এটি জীবাণুরোধী (Antimicrobial) এবং এন্টি-ফ্লামেটোরি (Anti-inflammatory)। যার জন্য গ্রিন টি ত্বকের একনে ট্রিট করতে সক্ষম হয়। এর মধ্যে থাকা পলিফেনল (Polyphenols) এর মাধ্যমে সিবাম অয়েল প্রোডাকশন (Sebum Oil Production) কমানো সম্ভব হয় আর স্কিনে একনে হওয়ার মুল কারণই হচ্ছে এই সিবাম অয়েল প্রোডাকশন। যদি আপনার স্কিনের অয়েল ব্যাল্যান্স ঠিক থাকে, একনে ব্রেকআউট হওয়ার সম্ভাবনা দূর হয়ে যাবে।  

স্কিন ক্যান্সার থেকে প্রটেক্ট করে

গ্রিন টির মধ্যে হাই লেভেলের পলিফেনল (Polyphenols) রয়েছে আর এছাড়াও রয়েছে ছয় ধরনের ক্যাটেকিন (Catechin) আর এদের মধ্যে অন্যতম দুটি ক্যাটেকিন হচ্ছে ‘এপিগালোক্যাটেকিন গ্যালেট (Epigallocatechin Gallate)’ বা সংক্ষেপে ‘ইজিসিজি (EGCG)’ আর ‘এপিক্যাটেকিন গ্যালেট (Epicatechin Gallate)’ বা সংক্ষেপে ‘ইসিজি (ECG)’।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (Antioxidant) হচ্ছে একধরণের মলিকিউল যা দেহের মধ্যে থাকা ফ্রি র‌্যাডিকেল (free radical) কে রুখে দিতে পারে। ফ্রি র‌্যাডিকেল এমন একধরণের কম্পাউন্ড যার লেভেল বেশি হলে দেহ, স্বাস্থ্য এবং ত্বকের বিভিন্নরকম ক্ষতি হতে পারে। এটি সেলুলার ড্যামেজ করতে পারে আর এটির অনেক রোগের সাথে লিঙ্ক থাকে যার মধ্যে ক্যান্সারও রয়েছে এবং ফ্রি র‌্যাডিকেল রুখে দেওয়া মানে হচ্ছে গ্রিন টি স্কিনকে ক্যান্সার থেকে রক্ষা করতে পারে। 

স্কিনের আর্লি এজিং থামায়

গ্রিন টিতে থাকা এপিগালোক্যাটেকিন গ্যালেট (Epigallocatechin Gallate) দুর্বল স্কিন সেলকে শক্তি দেয়। আর তাছাড়াও এটি ড্যামেজ হয়ে যাওয়া স্কিন সেলগুলো ঠিক করে এবং নতুন স্কিন সেল তৈরি করতে সাহায্য করে যার ফলে স্কিন হয় ইয়াং আর বয়স হওয়ার সাইনগুলো যেমন: রিঙ্কেলস আর ফাইন লাইনস ইত্যাদি স্কিন থেকে চলে যায়। 

স্কিনকে ময়শ্চারাইজ করে

গ্রিন টিতে অনেকধরনের ভিটামিন যেমন: ভিটামিন এ আর ই আর মিনারেল রয়েছে যা স্কিনকে ময়শ্চারাইজড আর সুস্থ রাখবে। ত্বকে গ্রিন টি এপ্লাই করলে স্কিনে থাকা রুক্ষতা আর শুষ্কতা কমে যাবে আর এর মাধ্যমে আপনি সফট আর কোমল স্কিন অর্জন করতে পারবেন।

কিছু গ্রিন টি সমৃদ্ধ স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট হচ্ছে:

লেখক: তানভীর

Leave a Reply